ঐতিহাসিক শহর সোনারগাঁও। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বেষ্টিত সোনারগাঁও ছিল বাংলার প্রাচীন রাজধানী। বর্তমান রাজধানী ঢাকার খুব কাছেই অবস্থিত এই আকর্ষণীয় সোনারগাঁও।
অবস্থান
সোনারগাঁ লোকশিল্প জাদুঘর রাজধানী ঢাকা থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলায় অবস্থিত।
ঐতিহাসিক পটভূমি বা গুরুত্ব
সোনারগাঁওর প্রাচীন নাম ছিল সুবর্ণগ্রাম।বাংলার বারো ভুঁইয়ার অন্যতম ঈশা খাঁর রাজধানীও ছিল সোনারগাঁওয়ে। ঈশা খাঁর রাজধানী হিসেবেই সোনারগাঁও সবচেয়ে বিখ্যাত।
দর্শনীয় দিকসমুহ
এখানে রয়েছে গ্রাম বাংলার ঐতিহাসিক নানান সব স্মৃতি। এগুলো হলো -লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন যাদুঘর, ঐতিহাসিক পানাম নগর, গোয়ালদী মসজিদ, গিয়াস উদ্দিন আযম শাহের মাজার ছাড়াও আরও অনেক ঐতিহাসিক স্থান।
পানাম নগর বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন শহর। পানাম নগরে কয়েক শতাব্দী পুরোনো অনেক ভবন রয়েছে যা বাংলার বার ভূঁইয়াদের ইতিহাসের সাথে জড়ানো রয়েছে। সোনারগাঁয়ের ২০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই পানাম নগরী গড়ে ওঠেছে।
জাদুঘরে দর্শনার্থীরা দেখতে পাবেন বাংলার প্রাচীন সুলতানদের ব্যবহৃত অস্ত্র শস্ত্র, তৈজসপত্র, পোশাক, বর্ম, অলংকার ইত্যাদি।বাংলার প্রাচীন ও মধ্য যুগের লোকশিল্পের অনেক নিদর্শন রয়েছে এখানে, রয়েছে বাংলার প্রাচীন মুদ্রা। কারুপল্লীতে বৈচিত্র্যময় দোচালা, চৌচালা ও উপজাতীয়দের আদলে তৈরি ঘরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অজানা, অচেনা, আর্থিকভাবে অবহেলিত অথচ দক্ষ কারুশিল্পীর তৈরি বাঁশ- বেত, কাঠ খোদাই, মাটি, জামদানি, নকশিকাঁথা, একতারা, পাট, শঙ্খ, মৃৎ শিল্প ও ঝিনুকের সামগ্রী ইত্যাদি কারুপণ্যের প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্র রয়েছে।
যে সময় যাবেন বা বেড়ানোর সময়কাল
প্রতি বৈশাখ মাসে এখানে সাড়ম্বরে আয়োজিত হয় লোকশিল্প মেলা। এমেলায় লোকসংগীত, যাত্রাপালা, কবিগান ইত্যাদি লোকসংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানমালা পরিবেশন করা হয়।এছাড়াও জাদুঘরের সম্মুখে অবস্থিত লেকে নৌকাভ্রমণ ও শীত মৌসুমে টিকেট কেটে মাছ ধরার ব্যবস্থা আছে।
যেভাবে যাবেন
যে কেউ প্রাইভেটকার অথবা মাইক্রোবাস নিয়ে সরাসরি লোক ও কারুশিল্প জাদুঘরে যেতে পারবেন। আর যদি বাসে যেতে চান তাহলে সোনারগাঁ মোগড়াপাড়া চৌরাস্তায় এসে নামতে হবে।
সেখান থেকে রিকশা/অটোরিক্সাযোগে সোনারগাঁ জাদুঘরে যেতে হবে। মোগড়াপারা বাসষ্ট্যান্ড থেকে প্রায় ২কি:মি: অভ্যন্তরে সোনারগাঁ যাদুঘরের অবস্থান এবং এর সাথেই রয়েছে পানাম নগরী। সুতরাং যে কেউ বাস, মিনিবাস, মাইক্রো, প্রাইভেটকার, বেবিট্যক্সি, মোটর সাইকেলসহ যেকোনো ধরনের বাহনেই সেখানে যেতে পারেন।
রেস্টুরেন্ট ও আবাসিক ব্যাবস্থা
এখানে রাতে থাকতে চাইলে সরকারি ডাকবাংলোয় অনুমতি সাপেক্ষে থাকতে পারেন।
প্রবেশমূল্য, খোলা ও সাপ্তাহিক বন্ধের দিন
সোনারগাঁ যাদুঘর বন্ধ থাকে বুধ এবং বৃহস্পতিবার।সোনারগাঁ জাদুঘরের ভিতরে প্রবেশ করার টিকিটের মূল্য ২০ টাকা। এ জাদুঘর বুধবার ও বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক বন্ধ থাকে। শুক্রবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত জাদুঘর খোলা থাকে। গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে।
0 comments:
Post a Comment